পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০০৯

উল্কা


উল্কা সাধারনত ‘ছুটন্ত নক্ষত্র’ হিসেবে পরিচিত। এটি আরোর একটি ঝলকানি। মহাকাশ থেকে কোন শিলাখন্ডের পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশের ফলে এর সস্টি হয়। এই শিলাখন্ডগুলো ঘন্টায় ১০-৩০ কি.মি. বেগে ছুটে চলে। যখন এরা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে তখন তীব্র ঘর্ষনের সৃষ্টি হয়। যা ধুলিকনাগুলোকে হাজার ডিগ্রী তাপমাত্রা পর্যন্ত উত্তপ্ত করে তোলে। এর ফলে আলোর ঝলকানি তৈরি হয়। মহাকাশ থেকে যে কোন তীব্র বেগে আসা বস্তুই এরকম উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং আগুন ধরে যায়।


উল্কাসমুহ প্রচন্ড তাপ এবং ঘর্ষনের ফলে সৃস্ট ষ্ফুলিঙ্গে পৃথিবিতে আসার পূর্বেই বাস্পীভুত হয়ে যায়। অপেক্ষাকৃত বড়




আকারের উল্কাপিন্ড কে বলা হয় FIREBALL এবং কিছু বিশাল আকারের উল্কা পৃথিবীতে এসে পড়ে এবং বিশাল গর্তের সৃষ্টি করে। বিজ্ঞানীরা বলেন যে, প্রতিবছর আনুমানিক তিন লক্ষ উল্কাপিন্ড ভূ পৃষ্টে পতিত হয়। এদের বেশিরভাগই পতিত হয় বনজঙ্গল, নদী-নালা, সমুদ্র কিংবা পাহাড়ী অঞ্চলে। এমনকি শহর কিংবা জনবসতির আশেপাশেও পড়ে। কিন্তু এদের বেশিরভাগই অনাবিস্কৃত থেকে যায়। কারন এগুলো দেখতে পৃথিবীর সাধারন শিলাখন্ডের মতই।
International Astronomical Union কর্তৃক সম্প্রতি উল্কাপিন্ডের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে এভাবে, “মহাকাশে পরিভ্রমনকারী কিছু কঠিন পদার্থ, যা আকারে ধুমকেতুর চেয়ে ছোট কিন্তু অনুর চেয়ে বড়”। Royal Astronomical Society উল্কাপিন্ডের সংজ্ঞা দিয়েছে এভাবে, “কঠিন পদার্থের আকার ১০০ মাইক্রোমিটার হতে ১০ মিটার হতে হবে”।
পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশের পূর্বে এসব শিলাখন্ড আপন কক্ষপথে সূর্যের চারিদিকে প্রদক্ষিনরত থাকে। পৃথিবীর আকাশে নির্দিষ্ট সময় পর পর উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়।আকাশের যে স্থানে এই উল্কাবৃষ্টি দেখা যায় সেখানে অসংখ্য ধূলিকণা এবং শিলাখন্ড একই কক্ষপথে অবতরণ করতে থাকে। এসব উল্কাসমূহ পৃথিবীর কক্ষপথে সবসময় একই দিক থেকে অতিক্রম করে। কারন পৃথিবী ঠিক এক বছর সময়ের ব্যবধানে আপন কক্ষপত একবার ঘুরে আসে। ফলে সবসময় বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবীর আকাশে উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়।







সবচেয়ে ষ্পষ্ট উল্কাবৃষ্টি প্রতিবছর আগষ্টের ১২ এবং ডিসেম্বরের ১৩ তারিখে দেখা যায়। এদের যথাক্রমে পারসেইড উল্কাবৃষ্টি এবং জেমিনেড উল্কাবৃষ্টি বলা হয়। কারন এদের রেডিয়ান্ট পয়েন্ট আকাশে তারকারাজির পারসিয়াস এবং জেমিনি অঞ্চলে দেখা যায়।

কিছু বাৎসরিক উল্কাবৃষ্টির তালিকা


কোয়াড্রেনটাইট জানুয়ারী,৩ ৬০ টি/ঘন্টা
লিরাইড এপ্রিল,২২ ১০ টি/ঘন্টা
পারসেইড আগষ্ট,১২ ৭৫ টি/ঘন্টা
লিওনিড নভেম্বর,১৭ ১০ টি/ঘন্টা
জেমিনিড ডিসেম্বর,১৩ ৭৫ টি/ঘন্টা


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Powered By Blogger